হজম শক্তি কে মজবুত করূন কোনো ওষুধ ছাড়াই
আজকাল প্রায় সবার মুখেই এই কথাটা খুব বেশি শোনা যায় যে তার হজম শক্তি খুবই দুর্বল সে যা খায় তা কোন কিছুই হজম হতে চায়না। ছোট থেকে বড় সবাই হজমশক্তি তে ভোগে সুস্বাস্থ্যের জন্য হজমশক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এটা বাধাগ্রস্ত হলে বা কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে পুরো দেহই স্থবির হয়ে পড়তে পারে হজমশক্তি বাধাগ্রস্ত হলে ওজন বেড়ে যাওয়া লিপিড প্রোফাইল বেড়ে যাওয়া ইউরিক এসিড বেড়ে যাওয়া রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার মত আরো নানান শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পুষ্টিবিদদের মতে হজম শক্তি বাড়ানো বা শক্তিশালী করার বিষয়টি একটু জটিল কারণ সব মানুষের হজমশক্তি এক ধরনের নয়। একই ধরনের খাবার অনেকেই হজম করতে পারে আবার অনেকেই পারে না সে ক্ষেত্রে খাবারের প্রতি সহনশীলতা পর্যবেক্ষণ করে তারপর কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে হজম প্রক্রিয়ার তিনটি ধাপ। এগুলো হচ্ছে কি খাবার খাওয়া হচ্ছে সেটা সেই খাবার পরিপূর্ণভাবে হজম হওয়া এবং হজমের পর সেটা দেহে শোষণ হওয়া এই তিনটি ধাপে দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান পুষ্টিবিদরা।
হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণেই ওজন বৃদ্ধি স্থূলতা বৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া অনেক সময় খাবার খেলেও শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি না পাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয় এছাড়া হজম প্রক্রিয়া গর্ভবতী মা ও শিশুদের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক না থাকলে গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে বাধাগ্রস্ত হয় আজকে আমি হজম শক্তি বাড়ানোর পাঁচটি কার্যকরী উপায় বলব এই পাঁচটি কার্যকরী উপায় যদি আপনি নিয়মিতভাবে ফলো করতে পারেন তাহলে আপনার হজম শক্তি জনিত যেকোনো সমস্যা মাত্র পনের দিনের মধ্যেই দূর হয়ে যাবে। যারা দীর্ঘদিন যাবৎ হজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা প্লিজ এই article টি সম্পূর্ণ পড়ুন ভালো লাগলে শেয়ার করে দেন। প্রথম উপায়
পর্যবেক্ষণ
হজম শক্তি বাড়ানোর প্রক্রিয়া বা একটি শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া সবার জন্য একরকম হয় না। ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয় সে ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির কোন খাবার খেলে সমস্যা হচ্ছে সেটি খেয়াল করতে হবে তবে বেশিরভাগ মানুষ বোঝে না যে কোন খাবারে তার সমস্যা হচ্ছে।
এজন্য তারা ধীরে ধীরে প্রায় সব ধরনের খাবারই বাদ দিতে থাকেন যেমন অনেকের ল্যাকটো বা দুধ হজম করতে সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে দুধ দুগ্ধজাতীয় খাবার একেবারে বাদ না দিয়ে ধীরে ধীরে সেটা সহ্য ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এছাড়া অনেক সময় নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিনের অভাবে হজম শক্তি দুর্বল হয়ে থাকতে পারে সে ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিলে তার শক্তিশালী করা সম্ভব। তাই কোন ধরনের খাবার খেলে আপনার হজম প্রক্রিয়ার সমস্যা হচ্ছে তা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে। দ্বিতীয় উপায়
শারীরিক ব্যায়াম
সব ধরনের শারীরিক ব্যায়াম হজমশক্তি কে বাড়ায় না বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা মেটাবলিজম বা হজম শক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট অঙ্গ মানুষের কোমরের দিকটায় বাঁ ডায়ফ্লাম উপর শুরু করে নিচ পর্যন্ত থাকে বলে জানান তারা। তাদের মতে যেসব ব্যায়াম শরীরের মাঝের অংশের কর্মকাণ্ড যত ভালো হবে হজম প্রক্রিয়া তত সুন্দর হবে।
শরীরের মাঝের অংশে কর্মকাণ্ড বাড়াতে হলে বিশেষ ধরনের কিছু ব্যায়াম করতে হবে যেমন চেয়ারে বসা ক্ষেত্রে রিভলবিং চেয়ার ব্যবহার করলে শরীরের নড়াচড়া সহজ হয়। একসাথে বসার ক্ষেত্রে যদি টুইস্টিং পদ্ধতির অর্থাৎ শরীরের উপরের অংশ একদিকে এবং নিচের অংশ আরেক দিকে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে হজম প্রক্রিয়া ভালো হয়।
এছাড়া কিছু ব্যায়াম করা যায় যেমন সুয়ে 90 ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে দুই পা উঁচু করে রাখতে হবে এবং পা দুইটি চক্রাকারে অর্থাৎ বাম থেকে ডানে এবং ডান থেকে বামে ঘোরাতে হবে এটা খুব ভালো কাজ করবে। স্পট জগিং বা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি জগিং করা যায় বাঁ হালকা করে লাফানো যায় এ ধরনের ব্যায়াম খুবই উপকারী হবে। শরীরের মাঝের অংশে চাপ পড়ে এমন ব্যায়াম হজম প্রক্রিয়াকে সহজতর করে বলেছেন পুষ্টিবিদরা। তৃতীয় উপায়
খাবার
হজম শক্তি মজবুত করতে হলে খাবারের প্রকার টা বুঝতে হবে যেমন খাবারের যদি সার থাকে তাহলে সেটি অবশ্যই তেল দিয়ে রান্না করতে হবে। আবার মাংস জাতীয় কিছু খেলে সাথে যাতে লেবু থাকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে তাছাড়া প্রতিবার খাওয়ার শেষে অল্প পরিমাণ লেবু জল খেলে সেটা হজমের ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করবে।
আপনি মৌরি ও খেতে পারেন মৌরিকে অনেকে পান মশলা বা মিষ্টি জিরা বলে থাকেন এছাড়া খাবার খাওয়া শুরু করার আগে জিহ্বা অল্প একটু লবণ স্পর্শ করিয়ে খাবার খেলে সেটিও হজমে সাহায্য করবে। এছাড়া গাট ব্যাকটেরিয়া যা হজম প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করে সেগুলো বেশি খাওয়া যেতে পারে। প্রাকৃতিক ভাবে এই ব্যাকটেরিয়ার সবচেয়ে ভালো উৎস হচ্ছে টক দই দিনের কোন একটা সময় দেড়শ থেকে দুইশ ml দই খাওয়া যেতে পারে চতুর্থ উপায়
পর্যাপ্ত ঘুম
রাত জেগে থাকাটা হজমে ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করে বলে জানান পুষ্টিবিদরা রাতের বেলায় এমনিতেই পরিবেশে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকে সেই সাথে রাতের বেলা ফুসফুসের বেশিরভাগ অংশ অব্যবহৃত থাকে যার কারণে পুরোপুরি শ্বাস নেয়া সম্ভব হয়না। আর জেগে থাকলে মানুষের সব ইন্দ্রিয় কাজ করে বলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হয়। যা হজম প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে এ কারণেই হজম শক্তি বাড়াতে হলে একে বেশ কর্মক্ষম করতে হলে রাতে ঘুমানোর জরুরি বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা। পঞ্চম উপায়
শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম
শারীরিক বিভিন্ন প্রিয়া কতটা ভালোভাবে কাজ করবে তা অনেকটাই নির্ভর করে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেনের সরবরাহ আছে কিনা। আর হজম বা শ্বসন প্রক্রিয়ার জন্য অক্সিজেন এর বিকল্প নেই সেই কারণে শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করাটা জরুরি বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা। এক্ষেত্রে নাক দিয়ে লম্বা করে শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে লম্বা করে শ্বাস ছারলে দেহে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে তাতে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়। বন্ধুরা এখন জানাবো আপনার হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে যেসব খাবার
নাম্বার 1 দারচিনি
দারচিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজের ফ্যাটি এসিড হজম করতে সাহায্য করে এবং এটি আমাদের রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই যারা হজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে এক ইঞ্চি পরিমাণ মতো দারচিনি চিবিয়ে খেয়ে নিন।
দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে রোশনের জুড়ি মেলা ভার রসুনের অ্যান্টিসেপটিক উপাদান যেকোনো ধরনের ঠান্ডা কাশি ভাইরাল ইনফেকশন দূর করার সাথে সাথে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। রান্নায় ব্যবহার পাশাপাশি কাঁচা রসুন যদি আপনি এক থেকে দুই কোয়া প্রতিদিন সকালে চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীর হজম শক্তি বেড়ে যাবে।
নানাম্বার 3 রসুন
মৌরি সাধারণত মুখসুদ্ধি হিসেবে কাজ করে এটি মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করে খালিপেটে মৌরি খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে। বন্ধুরা আপনাদের হজম শক্তি বাড়াতে চাইলে আপনার নিয়ম করে সকালে এক চামচ এর মত মৌরি চিবিয়ে খেয়ে হালকা গরম জল খেয়ে নিন দেখুন আপনার হজম শক্তি কতটা উন্নত হয়।
হজম শক্তি বাড়ানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে নির্দিষ্ট সময় মেনে খাবার গ্রহণ করা আপনার হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাবার গ্রহণের একটি সময়সূচী তৈরি করুন। প্রতিদিন একই সময়ে সকালে দুপুরে রাতে তিন বেলা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন একদিন এক সময়ে আবার আরেকদিন আরেক সময়ে খাওয়ার অভ্যাসটা ত্যাগ করুন।
নিয়মিত সময়সূচী মেনে খাবার গ্রহণের ফলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা ঠিক থাকবে এবং আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। পরিশেষে বলা যায় বদহজম থেকে মুক্তি পেতে আমার আজকের article লেখা নিয়ম যদি আপনি 15 থেকে 20 দিন ফলো করতে পারেন বন্ধু তাহলে আপনার হজম শক্তি উন্নত হবে।
আপনার অনিয়মিত খাদ্যভ্যাস ও জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করুন ফাইবার স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার পরিমিতভাবে গ্রহণ করুন দৈনিক খাবারের রুটিন মেনে চলুন ব্যায়াম করুন মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকুন।
বন্ধুরা বদহজম দূর করার অনেক উপায় আছে তার মধ্যে আমার আজকের article আমি যে উপায়গুলো বলেছি এগুলো যদি আপনি টানা 15 থেকে 20 দিন করতে পারেন তাহলে আপনার বদহজম দূর হবে article টি ভালো লাগলে বন্ধু শেয়ার করে দিন আপনার যেকোন social লিংকে আর comment করে জানান আপনার সমস্যার কথা
0 Comments