সঠিক ভাবে জলপান করার নিয়ম

 সঠিক ভাবে জলপান করার নিয়ম



যদি আপনার স্কিন প্রবলেম এসিডিটি মাংস বেশি এবং গাঁটে গাঁটে ব্যথা হজমের গন্ডগোল সারাদিন আলসেমি ভাব লাগা অথবা মাথায় যন্ত্রণা হওয়ার মতো হেলথ প্রবলেম গুলি থেকে থাকে। তবে রিসার্চ অনুযায়ী তার পেছনে অন্যতম সবথেকে বড় কারণ সঠিকভাবে এবং সঠিক মাত্রায় জল পান না করা। 


এতদিন জেনে এসেছে জলের অপর নাম জীবন আজকেই article থেকে জানতে পারবেন কিভাবে সঠিকভাবে জল পান না করলে সেই জলই আপনার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তো চলুন আজ এই আর্টিকেল থেকে জেনে নেওয়া যাক দিনে কখন কতটা পরিমাণে কিভাবে এবং কেমন জল পান করলে সেটা আপনার শরীরে উপকারে আসবে।


 কারণ এটা বাস্তব যে আমাদের মধ্যে 9 শতাংশ লোকই ভুলভাবে জলপান করেন আর তার প্রমাণ হলো। আর্টিকেল শুরুতে বলা রোগগুলো আমাদের সবার শরীরে এত কমন রোগ হয়ে ওঠা। আজকের সারাদিনের জল খেতে ভুলে গেছি ব্যাস একটা এক লিটারের বোতল নিয়ে ঢকঢক করে একবারে পুরো এক লিটার জল গলায় ঢেলে দিলাম। 


আপনি কি জানেন এতে আপনার উপকারে থেকে ক্ষতি বেশি হল এই জিনিসটিকে মেডিকেল টার্ম এ ওয়াটার ইনটক্সিকেশন বা ওয়াটার পয়জনিং বলা হয়ে থাকে। আমাদের শরীরে একটা নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটি রয়েছে একবারে জল ধরে রাখার ।এভাবে হঠাৎ প্রচুর পরিমাণে জল পান করলে আমাদের শরীরের রক্তে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার ফলে রক্ত থাকা বিভিন্ন এলেক্ট্রোলাইটস গুলি যার মধ্যে বিশেষ করে সোডিয়াম এর ঘনত্ব কমে যেতে থাকে।


 যার ফলে কোষের বাইরে থেকে ভেতরের দিকে জল ঢুকতে শুরু করে এবং ফলস্বরূপ কোষগুলি ফুলে ওঠে। এই ঘটনাটি যখন আমাদের ব্রেনের কোষগুলির সাথে ঘটে তখন মাথা যন্ত্রণা ক্লান্তি বমিভাব এরকম বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে শুরু হয় এই অবস্থাকে মেডিকেল টার্ম অনুযায়ী হাইপোনেট্রেমিয়া বলা হয়ে থাকে। এবার বক্তব্য হচ্ছে আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে জলের পরিমাণ সঠিক আছে কিনা আপনার ইউরিন এর কালার মূত্রের রং এটা ইন্ডিকেট করে আপনার শরীরে জলের পরিমাণ সঠিক আছে কিনা। 


যদি আপনার ইউরিন এর কালার গাঁডো হলুদ রঙের হয় হয় তবে তা শরীরে জলের অভাব নির্দেশ করে। আবার যদি আপনার ইউরিন এর কালার একদম পরিষ্কার জলের মত হয় তবে তা আপনার শরীরে জলের আধিক্য কে নির্দেশ করে। জলের ঘাটতি বাঁ আধিক্য দুটির কোনোটিই আমাদের শরীরের পক্ষে ভাল না যদি আপনার ইউরিন এর কালার একদম লাইট ইয়োলো কালার হয় তবে সেটা আপনার শরীরের সঠিক জলের পরিমাণ কে নির্দেশ করে। 


তাই আপনার ইউরিন এর কালার আপনার জন্য একটা খুবই ভালো ইন্ডিকেটর এছাড়া যখন আপনি দাঁড়িয়ে বা চলতে চলতে মুখ উঁচু করে ঢকঢক করে জল পান করেন। তখন জলের সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস ও আপনার শরীরে প্রবেশ করে যেটা অনেক ক্ষেত্রে এসিডিটির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 


তো উচিত কী? সবার প্রথমে তো একবারে 300ml অর্থাৎ তিন ঢোঁকের বেশি জল খাওয়া উচিত না। দ্বিতীয়তঃ জল খাওয়ার সময় কোথাও একটা শান্ত হয়ে বসে গ্লাসে অথবা বোতলের মুখ লাগিয়ে আস্তে আস্তে জল পান করা উচিত। কারণ যখন আপনি আস্তে আস্তে জল পান করবেন তখন আপনার মুখের মধ্যে ইঞ্জাইনস গুলি জলের মধ্যে মিশে গিয়ে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ পাবে। যেটা হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ওয়ান


 অলওয়েজ ড্রিক স্লোলি 


আপনিও কি তাদের মধ্যে একজন যাদের খেতে বসলে জল না খেলে চলেনা বা কারো কারো তো আবার আজ-কাল খেতেখেতে কোলড্রিংস না খেলে চলেনা। সেটাতো আরো মারাত্মক, যদি আপনি এনাদের মধ্যে একজন হন তবে সম্ভবনা আছে আপনিও প্রায়ই বদহজম এবং অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন। কারণ ঠিক যেমন কাঁচা খাবারটাকে রান্না করে তবেই আমরা খাই তেমনি সেই খাবার টা পেটে যাওয়ার পর বিভিন্ন পাচকরস গুলি সেই খাবারের সাথে মিশে গিয়ে সেই খাবারটি পাচন ঘটায়। 


অর্থাৎ বলা চলে যে পেটে যাওয়ার পর খাবারটা পাচকরস গুলির দ্বারা আবার দ্বিতীয়বার রান্না হয় তবে গিয়ে ফাইনালি আমাদের শরীরে খাবারটা মেশে। কিন্তু এবার ভাবুন আপনি যখন খাবারটা রান্না করছেন তখন যদি কেউ উল্টোপাল্টা বারবার খাবারে জল ঢালতে থাকে তাহলে কি রান্নাটা আদৌ ঠিক ভাবে হবে। খাবার খেতে খেতে যখন আপনি জল পান করেন তখন আপনার পেটের ভিতর ঠিক এই একই ঘটনাটা ঘটে।


 জল পান করার ফলে পাচকরস গুলির ঘনত্ব কমে যেতে থাকে যার ফলে খাবার ঠিকমতো হজম হতে পারে না আর ফলস্বরুপ বদহজম এসিডিটি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে শুরু হয়। তো উচিত কি? খাবার খাওয়ার অন্তত 30 মিনিট আগে এবং খাবার খাবার 30 মিনিট পরে জল পান করা। হ্যাঁ যদি ধরুন আপনি খুবই ড্রাই ফুড খাচ্ছেন তবে সেক্ষেত্রে আপনি খেতে খেতে এক কী দুই ঢোক জল খেতে পারেন। তবে সেটা শুধুমাত্র গলাটাকে ভেজানোর জন্য। স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার 2


ডোন্ট ড্রিঙ্ক ওয়ায়েল ইটিং


 আপনি হয়তো এর আগেও শুনেছেন আমাদের শরীরে 75 শতাংশ জল দিয়ে তৈরি। কিন্তু প্রতিদিন ঘাম মূত্র এবং নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে প্রায় দুই থেকে আড়াই লিটার জল বাইরে বেরিয়ে যায় তাই এই জলকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে আমাদের প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লিটার জল পান করতে হয়।


 কিন্তু দিনের ঠিক কোন সময় কি পরিমাণে জল পান করলে সবথেকে ভালো হয়। সবার প্রথমে তো ঘুম থেকে উঠেই দাঁত ব্রাশ করা বা বিছানা tea খাওয়ার আগেই সবার প্রথমে তিন ঢোঁক অর্থাৎ 300ml জল পান করা উচিত। কারণ সারা রাতে আমাদের মুখের ভেতরে ইঞ্জাইমস গুলি জমে সেগুলি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। 


আর এইজন্যই গুলিকে আয়ুর্বেদে সোনার থেকেও বেশি মূল্যবান বলা হয়েছে কিন্তু আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই ঘুম থেকে উঠে সোজা দাঁত ব্রাশ করতে চলে যায় যার ফলে ইঞ্জাইমস গুলি আর পেটের মধ্য পৌঁছানোর সুযোগ পায় না। তো কাল থেকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনার প্রথম কাজ খুব ধীরে ধীরে এক গ্লাস অথবা 300ml জল পান করা। 


এরপর সকালে ব্রেকফাস্ট করা 30 মিনিট আগে এবং 30 মিনিট পরে তিন ঢোঁক করে অর্থাৎ টোটাল 6 ঢোক মানে 600ml জল পান করুন একইভাবে দুপুরে খাওয়ার 30 মিনিট আগে ও পরে এবং রাতে খাওয়া 30 মিনিট আগে ও পরে তিন ঢোঁক করে জল পান করুন। এই সিম্পিল রুটিন ফলো করলেই আপনি প্রতিদিন নিয়মিত দু লিটার জল পান করে ফেলতে পারবেন। যাতে আপনার খাবার খাবার 30 মিনিট আগে ও পরে জল খাওয়ার কথা মনে থাকে তার জন্য আপনি আপনার মোবাইল ফোনের অ্যালার্ম ক্লক ব্যবহার করতে পারেন অথবা ওয়াটার ড্রিংক রিমাইন্ডার নামে এই অ্যাপটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। সো স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার থ্রি


 ফলোয়ার ড্রিংকিং রুটিন 


জল পান করার যেমন সঠিক সময় রয়েছে তেমনই কিছু সময় আছে যখন আপনার কখনোই জল পান করা উচিত না তার মধ্যে নাম্বার ওয়ান তো হলো খাবার খাওয়ার সময় নাম্বার টু টয়লেট করে আসার পরপরই জল পান করা উচিত না। 


কারণ এরকম ক্ষেত্রে আমাদের বেশকিছু পেশী শিথিল থাকে যার ফলে বেশীরভাগ জলি শরীরে কোনো কাজের না লেগে আবার বাইরে বেরিয়ে যায়। এবং ফল স্বরূপ বারবার টয়লেটে পেতে থাকে নাম্বার 3 রাতে শুতে যাওয়ার ঠিক আগেও জল পান করা একদমই উচিত নয়। 


কারণ এতে আমাদের মাঝ রাতে টয়লেট পাওয়ার কারণে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেটা আমাদের স্লিপ সাইকেলের ক্ষতি করে এবং ফলস্বরূপ স্লিপিং কোয়ালিটি কমে যেতে থাকে তো রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে অল্প পরিমাণে জল পান করা উচিত। এক্সেসাইজ বা জগিং করার সময় বা করার পরপরই প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া উচিত না। কারণ ওয়ার্ক আউট করার ফলে ঘামের মধ্যে দিয়ে প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রোলাইটস অলরেডি আমাদের শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়। 


এরকম অবস্থায় প্রচুর পরিমাণে জল পান করলে শরীরের বাকি ইলেক্ট্রোলাইট গুলিও সেই জলে মিশে গিয়ে ক্লান্তি বমিভাব এগুলো দেখা দিতে পারে তাই এরকম ক্ষেত্রে জলের পরিবর্তে গ্লুকোন ডি জাতীয় খাওয়া উচিত যাতে শরীরে শুধু জল নয় তার সাথে সাথেই এলেক্ট্রোলাইটস গুলি ও রিস্টোর হয়। স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার 4


এভোয়েড  ড্রিংকিং ওয়াটার এট wrong টাইমস 


আপনিও কি তাদের মধ্যে একজন যারা গরমে কোন জায়গা থেকে বাড়ি ফিরে সোজা ফ্রিজারে গিয়ে হামলা করেন এবং সেখান থেকে বরফের মতো ঠান্ডা জল বার করে ঢকঢক করে গলায় ঢেলে দেন। তবে সম্ভবনা আপনাকে প্রায়ই সর্দি কাশি এবং হজমের গন্ডগোল ভুগতে হয় এছাড়া আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমাদের বডির একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা রয়েছে বরফের মতো ঠান্ডা জল আমাদের শরীরে প্রবেশ করার ফলে সে টেম্পারেচার সঠিক বজায় রাখার প্রক্রিয়া কে বাধা পড়তে থাকে।


 এবং ফলস্বরূপ ব্লাড প্রেসার মেন্টেন রাখার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। তো উচিত উচিত কী? সব সময় নরমাল রুম টেম্পারেচার এর জল খাওয়া যেমন ইয়োগী কালচার অনুযায়ী আমাদের সব সময় নিজের শরীরের টেম্পারেচার থেকে ম্যাক্সিমাম 4° কমবেশি টেম্পারেচার এর মধ্যে জল পান করা উচিত। জলের টেম্পারেচার যদি এর থেকে কম বা বেশি হয় তবে তো আমাদের শরীরে উপকার থেকে বেশি অপকার করতে শুরু করে। স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার 5 


অল বেস্ট ড্রিঙ্ক রুম টেম্পারেচার ওয়াটার


 তো চলুন সবশেষে আবার একবার চট করে সমস্ত স্মার্ট আইডিয়া গুলি দেখে নেওয়া য়াক নাম্বার ওয়ান সব সময় আস্তে ধীরে এবং একবারে অল্প পরিমাণে জল পান করুন নাম্বার টু খাবার খাবার সময় জল পান করা থেকে বিরত থাকুন নাম্বার 3 সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে জল পান করার জন্য একটি রুটিন ফলো করুন।


 নাম্বার ফোর হুইল সময়গুলিতে জল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং নাম্বার 5 সবসময় ঘরের উষ্ণতা সমান জল পান করুন যেমন কেউ একজন বলেছেন ড্রিঙ্ক রাইট অ্যামাউন্ট অফ ওয়াটার ইন ইওর ইওর হেয়ার মাইন্ড এন্ড বডি অয়েল থ্যাঙ্ক ইউ।

Post a Comment

0 Comments